স্টাফ রিপোর্টার : আজ ৬ ডিসেম্বর, স্বৈরাচার পতন দিবস। গণ-আন্দোলনের মুখে ১৯৯০ সালের এই দিনে পদত্যাগ করেন তৎকালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এই দিনে তিনি অস্থায়ী সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। এর মাধ্যমে অবসান হয় ৯ বছরের স্বৈরশাসনের। মুক্তি পায় গণতন্ত্র। এদিন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধ্য হন তৎকালীন এরশাদ।
সামরিক আইন জারির মাধ্যমে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ ক্ষমতা দখল করেছিলেন তৎকালীন সেনাপ্রধান এরশাদ। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতৃত্বাধীন দুই জোটসহ বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর টানা আন্দোলনের মুখে এইচ এম এরশাদ ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন পৃথক কর্মসূচির আয়োজন করেছে। বাণী দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম।
১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বৈরশাসক এরশাদের নয় বছরের দেশ শাসনের অবসান ঘটে। দেশের গণতন্ত্রকামী জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের মুখে এরশাদ ক্ষমতা ছাড়াতে বাধ্য হন এবং তিন জোটের রূপরেখা অনুযায়ী, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
তবে জাতীয় পার্টি প্রতিবছর সারাদেশে এই দিনটিকে ‘গণতন্ত্র সংরক্ষণ দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। জেলায় এবং জেলার আওতাধীন উপজেলা ও পৌরসভায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিনটিকে পালনের জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এক রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর এরশাদ সরকার দেশের রাজনীতি থেকে শুরু করে সংস্কৃতি, সবক্ষেত্রে গণবিরোধী ধারা প্রবর্তন করে। রাজনৈতিক নেতা ও ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা ব্যাপক নিপীড়নের শিকার হন। ১৯৮৭ সালের ১০ নবেম্বর হরতালের সময় নূর হোসেনকে স্বৈরাচার সরকারের বাহিনী গুলি করে। যার বুকে-পিঠে ‘স্বৈরাচার নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ লেখা ছিল। ওইদিন সেনা ও পুলিশবাহিনী আমিনুল হুদা টিটোকে মেরে গুম করে। এ ঘটনায় সব মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এরশাদ সরকারে হটানোর আন্দোলনে নেমে পড়ে।
১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলনের সূচনা হয়। ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রত্যয় ঘোষণা করে। এভাবে ঘটনাক্রমিক আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ৬ ডিসেম্বর এরশাদ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
আজ সকাল ১০ টায় রমনাস্থ ইন্সটিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ মিলনায়তনে ‘৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের উদ্যোগে স্বৈরাচার পতন ও গণতন্ত্র মুক্তি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বক্তব্য রাখবেন ‘৯০’র ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্রঐক্যের নেতৃবৃন্দ। সভাপতিত্ব করবেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও সাবেকমন্ত্রী আমান উল্লাহ আমান।